গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় ও ওষুধের নাম।
ঘামের কারণে গোপনাঙ্গে চুলকানি ও ইনফেকশন যা কমন একটি ব্যাপার। চুলকানি শরীরের যে কোন জায়গায় হতে পারে। আমার মনে হয় প্রাইভেট এরিয়াতে চুলকানি সবচেয়ে কষ্টদায়ক ও বিব্রতকর। বুঝতেই তো পারছেন, আমি গোপনাঙ্গের চুলকানির কথা বলছি। গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করতে ঘরোয়া উপায় প্রয়োগে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
গোপনাঙ্গে চুলকানির কিছু কারণ
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গোপনাঙ্গের চুলকানি ইনফেকশনের কারণে হয়ে থাকে। ইনফেকশনের কারণ হতে পারে ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস, প্যারাসাইট বা ছত্রাক। গোপনাঙ্গের চুলকানি হতে পারে:
ছত্রাক সংক্রমণে
নারীদের গোপনাঙ্গে চুলকানির সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ভ্যাজাইনাল ইস্ট ইনফেকশন বা ক্যানডিডিয়াসিস। তাছাড়া নারী ও পুরুষ উভয়ের গোপনাঙ্গে ছত্রাক জনিত সংক্রমণ হতে পারে। গোপনাঙ্গে ছত্রাক সংক্রমণ হলে চুলকানি, নারীদের ক্ষেত্রে চুলকানির পাশাপাশি লিকোরিয়া বা সাদাস্রাব হতে পারে।
গোপনাঙ্গের ত্বকের সমস্যা
অ্যাকজিমা, সোরিয়াসিস এবং শুষ্ক ত্বকের কারণে গোপনাঙ্গে চুলকানি হয়ে থাকে।
এসটিআই রোগ
কয়েকটি এসটিআই রোগ রয়েছে যেগুলি গোপনাঙ্গের চুলকানির কারণ হতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে -
- ক্ল্যামাইডিয়া।
- গনেরিয়া।
- যৌনাঙ্গ হার্পস।
- ট্রাইকোমেনিয়াসিস।
এছাড়াও গোপনাঙ্গে রাসায়নিক দ্রব্যাদির ব্যাবহারের ফলে এলার্জি ও চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে।
আরো পড়ুন জ্বরের ঔষধ বা এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম ও এন্টিবায়োটিক খাওয়ার নিয়ম।
গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়।
গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় কি?কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করে গোপনাঙ্গে চুলকানি উপশম করা যায়। পদ্ধতি গুলোর মধ্যে রয়েছে:
১.বেকিং সোডা দিয়ে গোসল
ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণের কারনে চুলকানি হলে এবং তার পাশাপাশি আরো কিছু চুলকানির ক্ষেত্রে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকরী।
২০১৩ সালের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে বেকিং সোডায় অ্যান্টিফাঙ্গাল গুনাবলি রয়েছে।পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের অপর একটি গবেষণার দেখা যায় বেকিং সোডা ক্যান্ডিডা কোষকে মেরে ফেলে।
একথা স্পষ্ট যে, বেকিং ছত্রাক সংক্রমণ ঠেকাতে অত্যন্ত কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
১/৪ থেকে ২ কাপ বেকিং সোডা ১ বালতি পানিতে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এই পানি দিয়ে লম্বা সময় নিয়ে গোসল করতে হবে।
২.সুতি আন্ডারওয়্যার পরিধান
বায়ু চলাচল করে এমন স্থানে ছত্রাক দ্রুত বৃদ্ধি ও বিস্তার ঘটাতে পারে না। অন্যান্য কাপড়ের আন্ডারওয়্যার থেকে সুতি কাপড়ের আন্ডারওয়্যার বেশি আরামদায়ক। তাই আমাদের উচিৎ সুতি আন্ডারওয়্যার পরিধান করা। এতে ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে।
৩.প্রোবায়োটিক এর ব্যাবহার
প্রোবায়োটিক গোপনাঙ্গের অভ্যন্তরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। এধরণের প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল আকারে ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। তাই আপনার পাশের ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।
৪.নারিকেল তেল
২০১৬ সালের একটি গবেষণায় প্রমানিত হয় যে নারিকেল তেল ক্যান্ডিডা অ্যালবিক্যান্স এর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরী। তাই ছত্রাকের সংক্রমণ রোধে শরীর ও গোপনাঙ্গে নারিকেল তেল ব্যাবহার করা যেতে পারে। গোপনাঙ্গে ক্যান্ডিডা অ্যালবিক্যান্স এর বিস্তার রোধ করতে পারলে চুলকানি প্রতিরোধ করা অনেকাংশেই সম্ভব।
৫.প্রোবায়োটিক খাবার
প্রোবায়োটিক খাবারগুলো আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী পাশাপাশি গোপনাঙ্গের স্বাস্থ্যের জন্যও কম গুরুত্বপূর্ণ না। প্রোবায়োটিক খাবারগুলো আমাদের অন্ত্রের ও গোপনাঙ্গের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
প্রোবায়োটিক খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে -
- দই
- কম্বুচা
- কিচমিচ ইত্যাদি।
প্রোবায়োটিক খাবারগুলো ত্বকের ছত্রাকের ক্ষেত্রেও অনেক কার্যকরী। তাই গোপনাঙ্গের চুলকানি সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের চুলকানি প্রতিরোধে খেতে পারেন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার।
আরো পড়ুন মাথা ব্যাথার ঔষধ বা ট্যাবলেট এর নাম কি? কিছু মাথাব্যথার ওষুধের নাম।
ছেলেদের গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
মেয়েদের ও ছেলেদের গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো অভিন্ন। অর্থাৎ এই নিবন্ধে গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার যে ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে জানানো হয়েছে সেগুলো ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে কার্যকর। তবে ছেলেদের গোপনাঙ্গের ভেতরের অংশে সংক্রমণ কম হয়। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে গোপনাঙ্গের ভেতরের অংশে সংক্রমণের ফলে চুলকানি বেশি হয়।
গোপনাঙ্গে চুলকানির সাথে সংক্রমণজনিত লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অবহেলা নয়, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে চাই সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ।
গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ওটিসি ওষুধের নাম।
গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার জন্য ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ বা ওটিসি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।এই অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করতে সাহায্যে করে। এই ক্রিম মূলত গোপনাঙ্গে ছত্রাক সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের কারণে গোপনাঙ্গে চুলকানি হলে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
সে ক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। আপনার ডাক্তারকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। যে কোন ধরনের সংক্রমনের চিকিৎসায় ডাক্তার আপনাকে উপযুক্ত ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিবেন।
কর্টিসোন ক্রিম: নাভির নিচের চুল কাটার পর চুলকানি হতে পারে, এক্ষেত্রে কর্টিসোন ক্রিম ভালো কাজ করবে। তাছাড়া এটি একজিমা, ত্বকের এলার্জি ও কিছু ফুসকুড়িতে ভালো কাজ করে।
কিন্তু, এই ক্রিমটি কখনো গোপনাঙ্গের ভিতরে ব্যাবহার করা যাবে না।
ধন্যবাদ।
গুপনাঙ্গে গা হয়েছে ও অনেক চুলকায়
ত আমার এখন কী করনিয় 🙏🙏
সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি একজন ফিজিশিয়ান এর সাথে এই ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করেন। কারন ইনফেকশন এর ধরন অনুযায়ী তিনি ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিবে।