জ্বরের ঔষধ বা এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম ও এন্টিবায়োটিক খাওয়ার নিয়ম।
জ্বরের ঔষধ বা এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম ও এন্টিবায়োটিক খাওয়ার নিয়ম।
এন্টিবায়োটিক আমাদের অনেকের কাছে একটা পরিচিত শব্দ। অ্যান্টি মানে বিরুদ্ধে এবং বায়োটেক মানে জীবাণু, অ্যান্টিবায়োটিক মানে জীবাণুর বিরুদ্ধে।
এন্টিবায়োটিক বলতে আমরা ঐ সব ওষুধগুলোকে বুঝি যেগুলো জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে।, জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করে ও জীবানুকে মেরে ফেলে।
কিন্তু এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়াদের মারতে পারে ভাইরাস,ফাঙ্গাস,প্রোটোজোয়াদের নয়। ভাইরাসদের মারার জন্য এন্টিভাইরাস,ফাঙ্গাসদের মারার জন্য এন্টিফাঙ্গাল ও প্রোটোজোয়াদের মারার জন্য এন্টি প্রোটোজোয়াল ওষুধ ব্যাবহার করতে হবে।
যেহেতু, এই আর্টিকেলটি জ্বর হলে কোন এন্টিবায়োটিক গ্রহন করতে হবে এই বিষয়ের উপর লেখা তাই আমাদের এন্টিবায়োটিক ও এন্টিবায়োটিকের কাজ সম্পর্কে ভালো ধারণ থাকতে হবে।
তাহলে একথা স্পষ্ট যে, এন্টিবায়োটিক হলো এক ধরনের ওষুধ যেগুলো মানুষ ও অন্যান্য প্রানী দেহে ব্যাকটেরিয়াদের বিস্তার রোধ করে এবং ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে।
জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম কি?
আমাদের আগে জানতে হবে, জ্বর হলে এন্টিবায়োটিক খেতে হবে এই কথাটা সঠিক। জ্বর কোন রোগ নয়, এটি অন্য কোন রোগের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়। যেমনঃ প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে জ্বর আসতে পারে, নিউমোনিয়ার কারনে জ্বর আসতে পারে এরুপ আরো অনেক কারন রয়েছে যেগুলোর কারণে জ্বর হতে পারে।
সংক্ষিপ্ত ভাবে বলতে গেলে আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস সহ অন্যান্য জীবানুর সংক্রমণের ফলে জ্বর হতে পারে। আবার সংক্রমণ ছাড়াও কখনো কখনো সংক্রমণ ছাড়াও জ্বর হয়।
যাইহোক, একথা স্পষ্ট যে ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও শরীরে অন্যান্য অনুজীবের সংক্রমণের কারনে জ্বর হতে পারে। তাই, যেকোন জ্বরে এন্টিবায়োটিক গ্রহন করা কতটুকু যৌক্তিক?
আরো পড়ুন কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় বা লো ব্যাক পেইন চিকিৎসা।
কারণ আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়াদের মারতে পারে। তাই ব্যাকটেরিয়ার কারনে জ্বর হলে এন্টিবায়োটিক গ্রহন করলে জ্বর সারবে কিন্তু ব্যাকটেরিয়া ছাড়া ভাইরাস বা অন্যান্য জীবানুর কারনে জ্বর হলে এন্টিবায়োটিক গ্রহন করলে কোন লাভ হবে না। ধরুন, কোন ব্যক্তির কমন কোল্ড বা সাধারণ সর্দি-জ্বর বা ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে (এই সব রোগগুলো ভাইরাস জনিত) এখানে এন্টিবায়োটিক ব্যাবহার করে কোন লাভ হবে না।
আরেকটি উদাহরণ দেয়া যাক, আপনার কোন প্রতিবেশির টাইফয়েড জ্বর হয়েছিল। ডাক্তার তাকে এন্টিবায়োটিক পেসক্রিপশন করেছে যা খেয়ে তিনি সুস্থ হয়েছে। এখন আপনার ডেঙ্গু জ্বর হইছে, ঐ প্রতিবেশী আপনাকে দেখতে এসে যদি পরামর্শ দেয় আমার জ্বর হইছিল। আমি এই এন্টিবায়োটিক ওষুধ গুলি খেয়ে ভালো হইছি আপনিও খান ভালো হয়ে যাবেন। এই এন্টিবায়োটিক ওষুধ গুলি খাওয়া আপনার কি ঠিক হবে?
ডেঙ্গু জ্বর ও টাইফয়েড জ্বর এই দুটি রোগের একটি সাধারণ লক্ষণ হলো জ্বর কিন্তু কারণ সম্পুর্ণ ভিন্ন। ডেঙ্গু জ্বর ভাইরাসজনিত জ্বর আর তাই এক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক কোন কাজে আসবে না। আর টাইফয়েড জ্বর অন্ত্রে সালমনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারনে হয়ে থাকে তাই এক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক গ্রহন করা অত্যন্ত জরুরি।
তাহলে ফার্মেসির ডাক্তাররা জ্বর হলেই যে, এন্টিবায়োটিক দিয়ে দেয়! (সবাই না, সব ফার্মাসিস্ট এক না)
দিবেই তো, কারণ ফার্মেসির ডাক্তাররা আপনার জ্বরের কারণ ও রোগ শনাক্ত করতে ব্যার্থ হয়।তারা অন্ধকারে ঢিল মারে লক্ষ্যে লাগলে লাগবে, না লাগলে নাই। তাই সঠিক রোগ সনাক্তকরণের জন্য আমাদের ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীর (যেমনঃ মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট, কমিউনিটি প্যারামেডিক ইত্যাদি) নিকট পরামর্শ নিতে হবে।
আরো পড়ুন ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
শরীরে ব্যক্টেরিয়ার সংক্রামনের কারনে জ্বর আসলে সাধারণত যে এন্টিবায়োটিক গুলো বেশি ব্যাবহৃত হয় তার মধ্যে রয়েছে -
- সেফট্রিয়াক্সোন (ইনজেকশন)
- সেফিক্সিম (ক্যাপসুল)
- সেফুরক্সিম + ক্লাভুলানিক এসিড
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন
- এজিথ্রোমাইসিন ইত্যাদি।
তবে শর্ত হলো এই সকল এন্টিবায়োটিক গ্রহন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক গ্রহন করতে হবে।
আরো পড়ুন গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় ও ক্রিম এর ব্যাবহার।
ধন্যবাদ।